জহিরুল ইসলাম রাজুঃ ফুলগাজীতে আবারো বন্যায় মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ৭ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর জয়পুর অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সদ্য মেরামতকৃত স্থান আবারও ভেঙে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়পুর, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, পশ্চিম ঘনিয়া মোড়া, বৈরাগপুর, উত্তর দৌলতপুরসহ ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
২৫ আগস্ট বুধবার রাতে সদর ইউনিয়নের জয়পুরে সদ্য মেরামতকৃত স্থান আবারও ভেঙে যায়। মূহুর্তেই তলিয়ে যায় ঘর-বাড়ি ও মাছের ঘের। এদিকে পানির খরস্রোতে নষ্ট হচ্ছে সদ্য রোপনকৃত আমন ধান ও ফসলি জমি। তলিয়েছে ফুলগাজী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক। সড়কের উপর ২ ফুট পানির কারনে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন এবছরের জুন-জুলাই মাসে ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি উজানের পানিতে বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল। এসময় মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি অংশের ভাঙ্গন মেরামতে অর্ধ কোটি টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়েছিল। তিন মাস পার হলেও কোন ভাঙ্গন এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মেরামত করেনি বা কাজ সম্পন্ন করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব কাজে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রায় ১৫০ হেক্টর আমান আবাদি জমি এবং ৫ হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দু-তিন দিন পর নিরূপণ করা যাবে।
উপজেলা মৎস্য অফিস বলছে, ইউনিয়নে ২৩ হেক্টর জুড়ে ১৩৮ টি পুকুর ডুবে প্রায় ২৮ লাখ টাকার মতো মাছ পানিতে ভেসে গিয়েছে।
ফুলগাজী বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, হঠাৎ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বাজারের ড্রেনেজ লাইন দিয়ে বিপরীতমুখী হয়ে পানি বাজারে প্রবেশ করে। এতে বাজারের প্রায় শতাধিক দোকানে পানি প্রবেশ করে দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়।
ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে আমরা তলিয়ে যাওয়া গ্রামগুলো পরিদর্শন করে শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তবে এই সমস্যা আজকের নতুন কিছুনা, পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের নিজস্ব গৃহপালিত ঠিকাদার দিয়ে কাজ করার কারণে প্রতিবছরই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলিম মজুমদার বলেন, প্রতিবছর বাঁধ মেরামত বা সংস্কারের এসব খেলা বাদ দিয়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচিৎ নদী সংস্কারে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, বুধবার বিকেল থেকে নদীতে পানির প্রবাহ বেশি ছিল। রাতে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। ফলে বেরিবাদের ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে।