সাইফুল ইসলাম : বেহাল দশা ৩১ শয্যা বিশিষ্ট ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের। জরুরী যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক সংকট ও টেকনিশিয়ানের অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা। ২০০২ সালে উপজেলার পুরাতন মুন্সিরহাট বাজার সংলগ্ন ফেনী বিলোনিয়া মহাসড়কের পাশে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু হয়। হাসপাতাল চালুর ১৭ বছর হলেও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতির অভাব ও ডাক্তার সংকটে রোগীদেরকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।“ কুইনিন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে?” প্রাচীন এই প্রবাদটির মতই অবস্থা হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির।
প্রতিদিন হাসপাতালে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে ছুটে আসেন। কিন্ত চিকিৎসকের ১০টি পদ থাকলেও কাগজে কলমে আছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী মোশারফ হোসেন ও উপজেলা স্বাহ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ডাক্তার মোজাম্মেল হোসেন জানান, টেকনিশিয়ানের অভাবে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক্স-রে মেশিন। নেই ডেন্টাল ও ল্যাব টেকনিশিয়ান। দীর্ঘ ১৭ বছরেও জটিল অস্ত্রোপচার ও প্রসূতিদের সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়নি। ১০ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও মাত্র পাঁচ জন চিকিৎক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা।
এরই মধ্যে মেডিকেল অফিসার মাত্র ২ জন, গাইনি বিশেষজ্ঞ ১ জন, আরএমও ১ জন ও আইর্য়ুবেদিক মেডিকেল অফিসার ১ জন। হাসপাতালের এক্স-রে করার উপযুক্ত যন্ত্রপাতি থাকা স্বত্বেও টেকনিশিয়ানের অভাবে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে ঐসকল যন্ত্রপাতি। দন্ত বিভাগ থাকলেও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার লোক নেই। টেকনিশিয়ানের অভাবে নষ্ট হয়ে যা”েছ ডেন্টাল বিভাগের যন্ত্রপাতি। প্যাথলজি ল্যাব টেকনিশিয়ান পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য। এতে অসহায় গরীব রোগীদের অতি প্রয়োজনীয় এক্স-রে ও সাধারন পরীক্ষাগুলো বাহিরে থেকে চড়া মূল্যে করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ূন কবির জানান, হাসপাতালটি স্থাপন হওয়াতে এই অঞ্চলের মানুষ স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছিলো। কিš‘ হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ডাক্তার সংকটে ও ঔষধ পত্র ঠিকমত না পাওয়াতে আমরা প্রতিনিয়ত দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জরুরী কোন প্রসূতি রোগী বা এক্সিডেন্ট হওয়া রোগী আসলে এই হাসপাতালটি কোন সেবা দিতে পারে না। ফলে আমাদেরকে কমিউনিটি ক্লিনিক বা ফার্মেসীর অথবা জেলা সদর হাসপাতালের সরনাপন্ন হতে হয়। ঠিকসময়ে চিকিৎসা না পাওয়ায় ও সদর হাসপাতাল দূরে হওয়াতে অনেক সময় বিভিন্ন রোগীর অকালে তাদের জীবন হারাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ফেনী জেলা সিভিল সার্জন নিয়াতুজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটের বিষয়টি তিনি জানেন। বিষয়টি তিনি নিজেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অনেকবার জানিয়েছেন।