এম.নিজাম উদ্দীন মজুমদার সজিবঃ আর কদিন পরেই ঈদ। মুসলমানদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আয্হা বা কুরবানির ঈদ।আর কুরবানীকে সামনে রেখে ফেনীর পরশুরামের খামারীরা পশু মোটাতাজা করন শেষ করে এখন বিক্রির জন্য বাজারে তুলতে শুরু করেছে ।কিন্তু প্রতি বছরের তুলনায় এবার দেশে করোনা (কভিড-১৯)প্রাদূর্ভাবের কারনে পশুর হাট মন্দা। বিশেষ করে এখানকার প্রবাস নির্ভর মানুষগুলো লক-ডাউন বা করোনা প্রাদূর্ভাবের কারনে বেকার হয়ে পরায় আর্থিকভাবে সংকটে পরেছে। আবার চাকুরীজীবি এবং ব্যবসায়ীরাও আর্থিক সংকটে আছে যার কারনে অনেকের ধারনা এবার অর্থাভাবে অনেকেই কুরবানী দিতে পারবেনা।
পরশুরাম উপজেলার গরু খামারীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনা পরিস্থিতিতে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বছর ব্যাপী গরু লালন-পালনকারী খামারী ও গৃহস্থ্যরা অনিশ্চয়তার মাঝে পরেছে গরু কেনাবেচা নিয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরশুরাম পৌর শহরের শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মজুমদার এগ্রো ফার্ম ও বিভিন্ন বাড়ীতে গরু লালন-পালনের চিত্র। পুরো বছর ধরে ধারদেনা করে গরুর খাবার কিনে থাকেন। অনেকে আবার বিভিন্ন এনজিও থেকে টাকা ঋণ নিয়েও গরু কিনে থাকেন কুরবানি ঈদে সেই গরু বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবে। কিন্ত এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। স্বপ্ন ভেঙে যেতে বসেছে খামারিদের।
উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ ঈসমাইল হোসেন জানান, মজুমদার এগ্রো ফার্মে আড়াই শতাধিক গরু রয়েছে। আমাদের উপজেলা প্রানীসম্পদ অফিস থেকে অত্র খামারের সুরক্ষা দিয়ে থাকি।খৈল, ভূষি,কুঁড়া,কাঁচা ঘাস,শুকনো খর এবং ভুট্টা ভাঙ্গা এসব দেশীয় প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।অধিক মুনাফা লাভের আশায় বা তাড়াতারি বড় হওয়ার জন্য এখানে কোন ধরনের কৃত্তিম ইনজেকশন বা কোন ধরনের ক্ষতিকারক কিছু ব্যবহার না করেই সার্বক্ষনিক নজরদারির মাধ্যমে পশু বিক্রয় উপযোগী করা হয়েছে।
খামারের ব্যবস্থাপক মোঃ খোকন বলেন আমাদের খামারে ২৫০ টি গরু রয়েছে। করোনার কারনে গরুর হাট বন্ধ, ব্যাপারীরা আসছেন না। কেউ এলেও গরুর দাম বলছেন অর্ধেক। এমন চলতে থাকলে রাস্তায় বসা ছাড়া আর উপায় থাকবে না।
খামারের শ্রমিক মনির হোসেন জানায় ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির জন্য ২৫০টি গরু প্রস্তুত করেছি। কিন্ত গরুর হাট বন্ধ থাকায় বেচাকেনাও বন্ধ। এ বছর ব্যাপারীরা কেউ আসছে না।গরু বিক্রী না হলে আমাদের পারিশ্রমিক পেতে হিমশিম খেতে হবে।
খামারের মালিক পরশুরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহজ্ব কামাল উদ্দিন মজুমদার জানান, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতির পাশাপাশি গরুর খামার করেছি। প্রায় ২ একর জায়গার উপর খামার করেছি সেখানে ছোট বড় মাঝারি মিলে ২শত ৫০ টি গরু রয়েছে। খামারে ২৫ জন শ্রমিক দিনরাত পরিশ্রম করে গরু মোটাতাজা করনের মাধ্যমে বিক্রীর উপযোগী করেছে। প্রতিবছর খামারে ভাল লাভবান হলেও এবছর করোনা পরিস্থিতির কারনে গরু বেচাকেনা হচ্ছেনা আর সামান্য কিছু বিক্রি হলেও দাম কম।
এছাড়া পরশুরাম উপজেলা সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় পাশের দেশ ভারতে থেকে গরু আসলে দাম আরো কমে যাওয়ার অশংকা করছেন। তিনি বলেন এবার পরশুরামের গরু খামারীরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হবে এবং বড় ধরনের লোকসানের সম্ভাবনাও রয়েছে। খামারীদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।