চন্দ্র ও সূর্য আল্লাহর বড় বড় নিদর্শন সমূহ থেকে দু টি নিদর্শন, যা আল্লাহর নির্দেশে কিয়ামত পর্যন্ত
তাদের নিজস্ব জায়গায় নির্দিষ্ট সময় চলমান থাকবে,
সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ
আর এ দুটি নিদর্শন কখনো কখনো আল্লাহর নির্দেশে গ্রহণ হয়ে থাকে।যাকে আমরা সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ বলে থাকি। এই অস্থায়ী পৃথিবীতে যাহা কিছুই হয় বা ঘটে সবই মহান পালনকর্তার কুদরত বা তার হুকুমেই ঘটে।
সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের ক্ষেত্রে ও তার ব্যতিক্রম নয়। এসব কিছু আল্লাহর হুকুমে হয়। তাই এসবের ক্ষেত্রে আমাদের আকীদা বিশ্বাসর প্রতি খুবই যত্নবান হতে হবে। কোন ভাবেই যেন কুপবৃত্তির শিকার না হই। তাই অসংখ্য অগণিত হাদিস বলা হয়েছে যে সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ শুধু মাত্র আল্লাহর নির্দেশ ক্রমেই হয়ে থাকে। এটি কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারনে নয়।
তবে এই সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ এর মধ্য দিয়ে আল্লাহ তার বান্দাদের কে ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন, যেন বান্দারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহ্ মুখি হয়, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে।
সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের ক্ষেত্রে করণীয় :
(1) বেশি বেশি দোয়া ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
(2) তাকবীর তথা আল্লাহর মহত্ত্ব বর্ণনা করা,
যেমন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার।
সেই সাথে বেশি বেশি আল্লাহর প্রশংসা করা ও তাসবী ইত্যাদি পাঠ করা।
(3) আল্লাহর যিকির বা স্বরনে নিমগ্ন থাকা।
(4) সাদ্য অনুযায়ী কিছু সাদকা মানি দান করা।
(5) বেশি বেশি ইস্তেগফার করা।
যেমন আমরা ইস্তেগফার করে থাকি— আস্তাগফিরুল্লাহ , মানি আল্লাহর কাছে নিজের গুনা ও ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চাওয়া।
(6) গোলাম মানি দাস- দাসী কে আযাদ ও স্বাধীন করে দেওয়া।
তবে এখন যেহেতু দাস দাসী নাই, তো সেক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো। আমি আপনার তত্ত্বাবধানে আমাদের যেসব মা বোন ভাই কোথাও জুলুম ও নির্যাতন আর নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। তাদের কে সেই নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা।
এ ক্ষেত্রে পশু পাখী কে ও আযাদ করতে পারেন।
কারন খাঁচা যদি স্বর্ণ দিয়ে ও তৈরি করা হয়। তবুও সেখানে সে স্বাধীন নয় সুখী নয়, তাদের ও একটা ভিন্ন জগত আছে।
তাই পশু পাখীর প্রতি সহানুভূতি করা আমাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব,
(7) নফল নামাজ পড়া
অন্যান্য করণীয় এর সাথে সাথে হাদীসে এই সময় নামাজের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আর এই সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ কালে নামাজ আদায়ের বেশ কিছু পদ্ধতির কথা হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে।
সো সে ক্ষেত্রে যে কোন এক পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে। বাকি আমাদের সবার জন্য যেটা সবচেয়ে সহজ, সে টা হচ্ছে, আমরা এই নামাজ কে অন্য নফল নামাজ এর মত আদায় করবো ,দুই রাকাত হোক কিংবা চার রাকাত।
তবে এই নামাজে নতুন অতিরিক্ত যা করতে হবে– সেটা হচ্ছে, যে এখানে নামাজের কেরাত, কিয়াম, রুকু এসব একটু দীর্ঘ সময় নিয়ে করতে হবে।
আর এই নামাজ নারী পুরুষ উভয়ের জন্য,,
তবে মা বোনেরা নিজ নিজ ঘরে আদায় করবে,
আর পুরুষের ক্ষেত্রে এই নামাজ সম্মিলিত ভাবে মসজিদ কিংবা ঈদ গাহে পড়া ভালো, না হয় একা একা নিজ নিজ ঘরেও পড়া যেতে পারে।
উপরোক্ত করণীয় বিষয়ে বাদীস শরীর
عن أبي موسى الأشعري رضي الله عنه————————- وقال هذه الأيات التي يرسل الله لا تكون لموت أحد و لا لحياته ولكن يخوف الله به عباده فاذا رأيتم شيأ من ذلك فافزعواإلى ذكره ودعاءہ و استغفاره ،
صحيح البخاري (١٠٥٩) مسلم(٩١٢) صحيح ابن حبان(٢٨٣٦)
অর্থ
এসমস্ত নিদর্শন যা আল্লাহ্ তায়ালা পাঠান, তা কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারনে নয়। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা এর মাধ্যমে তার বান্দাদের কে ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন, সো যখন তোমরা সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ দেখবা তখন আল্লাহর স্বরন, দোয়া, আর ইস্তেগফারে মগ্ন হ ও ,,,
তো এই হাদিসে আল্লাহর যিকির, দোয়া, ইস্তেগফার এতিন টি আমলের কথা বলা হয়েছে।
( বুখারি শরিফ, মুসলিম শরিফ)
অন্য হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে,
إن الشمس والقمر آيتان من آيات الله لا يخسفان لموت أحد و لا لحياته فاذا رأيتم ذلك فادعوا الله وكبروا تصدقوا ،
(سنن النسائي )
فاذا رأيتم ذلك فافزعوا إلى الصلاة وإلى الصدقة وإلى ذكر الله ،( مسند أحمد ٢٦٩٩٢)
এখানে হাদীসদ্বয় উপরোক্ত আমল ছাড়া আরো নামাজ, দান সাদকা, তাকবীর, এর কথা বলা হয়েছে,,
إن الشمس والقمر آيتان من آيات الله لا يخسفان لموت أحد و لا لحياته فاذا رأيتم ذلك فاذكروا الله،
এই হাদিসে আল্লাহর যিকির বা স্বরনের কথা বলা হয়েছে,
(বুখারি শরিফ, নাসায়ি শরিফ)
عن أسماء بنت أبي بكر —
أمر النبي صلى الله عليه وسلم بالعتاقة في كسوف الشمس،
এই হাদিসে গোলাম আযাদের কথা আলোচনা করা হয়েছে,
( বুখারি শরিফ)
আল্লাহ্ আমাদের সকল কে সর্ব ক্ষেত্রে শরিয়তের বিষয়গুলো বুঝে তা অনুযায়ী নিজের জীবন গঠন করার তাওফীক দান করুক।
আমীন,,
লেখক : মাওলানা মুফতী তাজুল ইসলাম কাসেমী, মাজাহেরী।